মাফিজুল ইসলাম, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। আগাম জাতের আলু চাষের মৌসুম শুরু হলেও আলু বীজের চড়া দাম হওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন প্রান্তিক কৃষকরা ।
সরকারী ডিলার পর্য়ায়ে আগাম জাতের আলু বীজের সরবরাহ না থাকায় বাজারে বীজের দাম লাগাম হীন হয়েছে । অবস্থা এমন থাকলে এবার মৌসুমি আলু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রাও ব্যহত হতে পারে । মুল্য বৃদ্ধিতে বীজ সিন্ডিকেটের কথাও ইঙ্গিত করছেন কেউ কেউ।
কারণ মৌসুমে যে আলু কৃষকের নিকট থেকে ব্যবসায়ীরা ১৫ টাকা করে নিয়েছিল, সেই আলুই রোপন মৌসুমে কৃষকদের নিকটই ৮৫/৯৫ দরে বিক্রি করছে। মুলত এটি একটি সিন্ডিকেটের কারসাজি বলে ধারণা করছেন কৃষকরা । তারা চাহিদার তুলনায় কম আলু হিমাগার থেকে বের করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বৃদ্ধি করছে। এসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদারকি নেই বলে ভুক্তভোগীরা জানান। এবার উপজেলায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করে কাজ করছে কৃষি বিভাগ ।
তিন ফসলী জমিতে কৃষকরা আগাম আলু রোপনের জন্য আগাম জাতের আমন ধান আবাদ করেছেন। কিন্ত এবার আগাম আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। বাজারে খাবার আলু ৫৫/৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে । হিমাগারে যে সব বড় কৃষক আল বীজু মজুদ করে রেখেছে তাদের অসুবিধা না হলেও প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের আগাম জাতের আলু বীজ কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। ব্র্যাক ও এসিআই সহ বিভিন্ন কোম্পানিতে আগাম বুকিং দিয়ে রাখলেও প্রতি কেজি আগাম জাতের বীজ আলুর দাম পড়ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি বিঘা আলু বীজের দাম পড়ছে প্রায় ২০ থেকে ২১ হাজার টাকা। গত বছর যা ছিল অর্ধেক । এছাড়া রয়েছে আলু রোপন পরিচর্চা, কীটনাশক এবং উত্তোলন পর্যন্ত সব মিলিয়ে বিপুল খরচ । এর পর যদি আবহাওয়া বৈরী হয় এবং মুল্য পতন ঘটে তাহলে কৃষককে পথে বসতে হবে। আগাম জাতের আলু গুলো হচ্ছে ৮৬.৭৯, ডায়মন্ড, ক্যারেজ, শাহিন, কাটিনাল । যা রোপনের ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে এসব উত্তোলন করে বোরো ধানের আবাদ করতে পারবে কৃষক । আওলাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ধলটিকর গ্রামের কৃষক একরামুল হক চৌধুরী জানান তিনি এবার ৯০ বিঘার অধিক জমিতে আলু চাষ করবেন। তবে এবার বীজের চাহিদা বেশি হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে তাই দামও প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। তেলিহার গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান বলেন, এবার চার বিঘা জমিতে আলু লাগাবো। তবে আলু বীজের বেশি দাম হওয়ায় এবারে আলু চাষে বিঘা প্রতি অনেক টাকা খরচ হবে।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন(বিএডিসি) এর বীজ ডিলারদের মাধ্যমে উপজেলায় আঠারো জন ডিলার সরকারী মুৃল্যে মৌসুমি বীজ সরবরাহ করবে। ষ্টিক জাতের আলু বীজ ৬৫ টাকা কেজি দরে আগে আসলে আগে পাবে ভিত্তিতে কৃষক নিতে পারবে। এসব বীজ রোপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মাথায় আলু উত্তোলন করা যায় ।
বিএডিসির বীজ ডিলার আব্দুল মাবুদ বলেন, কৃষকের চাহিদা না থাকলে সব ডিলার বীজ উত্তোলন করেনা। তবে কৃষক চাইলে ডিলাররা সরকারী মুল্যে আলু বীজ দিতে বাধ্য।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান জানান, বীজের দাম বেশি হলেও আলু উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা পুরন হবে বলে আশা করছি।