ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত পৌনে নয়টা পর্যন্ত সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়–সংলগ্ন লাউঞ্জে এ সভা হয়। সভায় সিন্ডিকেটের ১৭ সদস্যের মধ্যে ১৫ জন অংশ নেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া দুজন সিন্ডিকেট সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোটা সংস্কারের আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা যে ৯ দফা দাবি দিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে একটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতি বন্ধ চেয়ে বিক্ষোভ–মিছিল ও সমাবেশ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
এর মধ্যে গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক (এফএইচ) হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
এই দুই ঘটনা নিয়ে দিনভর বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এভাবে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ জানান বিভিন্ন দল, সংগঠন ও নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যে এফএইচ হলের ছয় শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের দলীয় রাজনীতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।