ঢাকারবিবার , ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভূমি অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষের ভুল সংশোধন করে ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদানে ভুক্তভোগী জমি মালিকদের সভা

আজকের বিনোদন
আগস্ট ২৫, ২০২৪ ৫:০৮ অপরাহ্ণ । ২৩ জন
Link Copied!
দৈনিক আজকের বিনোদন সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধাঃ-
সাসেক সংযোগ প্রকল্প এর আওতায় গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলাধীন নুনিয়াগাড়ী মৌজার মহাসড়ক সংলগ্ন অধিগ্রহণকৃত জমি ও অবকাঠামোর টাকা নিয়ে দীর্ঘ টালবাহনার পর চেক প্রদানের ঠিক পূর্বমুহুর্তে বিআরএস রেকর্ড গেজেট না হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপনের প্রতিবাদে জরুরী সভা করেছে ভুক্তভোগী জমির মালিকগণ। সভায় ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিক, সাংবাদিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়করা অংশ নেন।
সভা থেকে আশু সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানসহ প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়।
শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে চৌমাথা মোড়ে (সাবেক রুবেল মার্কেটের সামনে) এ জরুরী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন, ক্ষতিগ্রস্ত জমি মালিক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু তালেব তারা।
সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহ আলম সরকার, সাংবাদিক রবিউল হোসেন পাতা, ফেরদাউছ মিয়া, আমিনুল ইসলাম কবির, ছাদেকুল  ইসলাম রুবেল। জমি মালিক জালাল উদ্দিন বাচ্চু, আজিজার রহমান মোল্লা, রিয়াশাদ রিফফাত নবী মলিন, খোরশেদ আলম, সুরুজ হক লিটন, মশিউর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ইভান।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, ইউসুফ মন্ডল, অর্ণব আহম্মেদ সামিদ, রবিউল ইসলাম ইকবাল প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন, মোশফেকুর রহমান মিলটন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের ১৯৯০ সালে শুরু হওয়ায় ভূমি জরিপ (বিআরএস) জেএল নং-৬৯ মৌজা নুনিয়াগাড়ী বর্তমানে চলমান আছে। এতদ পরেও সংশ্লিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষের ত্রুটিপূর্ণভাবে অসম্পূর্ণ বিআরএস (ডি.পি খতিয়ান) মূলে তাং ১২/০১/২০২১ইং ৪ ধারা, তাং ১২/০১/২০২৩ ইং ৭ ধারা ও তাং ৩১/০৭/২০২৩ইং ৮ ধারা নোটিশ প্রদান করেন। অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত তালিকা অনুযায়ী স্ব-স্ব ভূমির মালিকগণকে অবকাঠামো ও জমির মালিক নির্ধারণ করা হয়েছে মর্মে প্রয়োজনীয় কাগজ জমা প্রদানের নিমিত্তে ৮ ধারার নোটিশ প্রদান করেন এবং প্রার্থীত জমির মালিকগণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বৈধ কাগজ পত্রাদী দাখিল করেন। ভূক্তভোগী মালিকদের ক্ষতিপূরণের অর্থ জরুরী ভিত্তিতে দেওয়া হবে মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবকাঠামো অপসারণ করা হয়।
এরপর দীর্ঘ ০৪ মাসেও অর্থ না দিয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপদের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নুনিয়াগাড়ী মৌজার অসম্পন্ন খতিয়ান মূলে চারটি মৌজার ভূমির দখল স্বত্ত্ব হস্তান্তর করে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)  বিআরএস রেকর্ড গেজেট না হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপন করেন।
ভুক্তভোগী জমির মালিকগণ উপায়ন্তর না দেখে, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস, রংপুরের শরণাপন্ন হয়। আশানুরুপ ফল না পেয়ে ভূক্তভোগী মালিকগণের পক্ষে মোঃ সুরুজ হক (লিটন) ভূমি উপ-সচিব বরাবর নুনিয়াগাড়ী মৌজার গেজেট প্রকাশের জন্য দরখাস্ত দাখিল করলে একই সাথে গত ১২/১২/২০২৩ ইং তারিখ বাংলাদেশ সরকারের ভূমি উপ-সচিব দপ্তর হতে নুনিয়াগাড়ী মৌজার গেজেট প্রকাশের জন্য জোনাল সেটেলমেন্ট কার্যালয়, রংপুরে পত্র প্রেরণ করেন।
তাদের অভিযোগ, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা অন্যায় লাভের আশায় কিছু মামলা নিয়ে তা নিষ্পত্তি না করে বিভিন্ন টালবাহানায় কালক্ষেপন করছে।
ফলে উল্লেখিত মৌজার দিশেহারা ভূমি মালিকগণ উপায়ান্তর না পেয়ে ০৪ মাস পরে পলাশবাড়ী চৌমাথা মোড়ে মানববন্ধন করে বিভিন্ন দাবীর মধ্যে ৫% উৎকোচ নেওয়া বন্ধ ও কানুনগো মোঃ রাকিব এর বদলী এবং সহজভাবে ব্যবসায়ীক ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির জন্য দাবী-দাওয়া তুলে ধরেন, ফলে জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষ উক্ত নুনিয়াগাড়ী মৌজার ভূমি মালিকদেরকে উক্ত মানববন্ধনের উদাহরণ টেনে নানা হয়রাণী করে।
এদিকে, সূদীর্ঘ সময় ক্ষতিপূরণের অর্থ না পেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিআরএস রেকর্ডের গেজেট হয়নি মর্মে জানান। নিয়ম বর্হিভূতভাবে অসম্পন্ন বিআরএস খতিয়ান সূত্রে ভুলভাবে অধিগ্রহণ করেন এবং কর্তৃপক্ষের ভুলগুলো মালিকগণের উপর চাপিয়ে দিয়ে অমানবিক হয়রানী করা হচ্ছে। জোনাল সেটেলমেন্ট কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে অন্যায় লাভের আশায় গেজেট প্রকাশের অনীহায় বিভিন্ন মামলার অজুহাতে টালবাহানা করছে।
ভুক্তভোগিরা আরো জানান, আমরা ভূমি মালিকগণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (অবকাঠামো) ভেঙ্গে দিয়ে কর্মহীন ও বাসস্থানহীন হয়ে অতি মানবেতর জীবন যাপন করছি। যাহা অনাহার-অর্ধাহারের সমান। অনেক ভূমির মালিক দুশ্চিন্তায় বেশ কয়েজন মৃত্যুবরণ করেছে। এমতাবস্থায় অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষ যে সূত্রে অধিগ্রহণ সম্পাদন করেছে। সেই সূত্র ধরেই ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করা অতিব জরুরী, অন্যথায় আমরা ভূমির মালিকগণ অপূরনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হব।
এমতাবস্থায় আশু সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানসহ প্রয়োজনে নিজ এলাকাসহ এমনকি ঢাকায় মানববন্ধনসহ বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী প্রদান করা হবে বলে জানান তারা।