হাঁড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে টাঙ্গাইলের মধুপুরে বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষকরা। তবে প্রচন্ড শৈতপ্রবাহের কারণে শ্রমিক সংকটে পড়েছেন কৃষকগন। কৃষকরা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এবার বোরো আবাদের খরচ অনেক বেশি। বেশি টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
সরেজমিনে মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উঁচু ও নিম্ন অঞ্চলের জমিতে সেচ দিয়ে ট্রাক্টরের মাধ্যমে হাল চাষ করে জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে। কেউ ধানের বীজতলা থেকে চারা উঠাচ্ছেন, কেউ জমি সমতল করছে, কেউ সার ছিটাচ্ছেন, আবার কেউ ধানের চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কৃষক ও শ্রমিকদের দম ফেলার সময় নেই।
মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের আঃ হাকিম জানান, গত কয়েকদিন ধরে ২ বিঘা জমি হাল চাষ করে ধানের চারা রোপণের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি। এই প্রস্তুত জমিতে দ্রুত ধানের চারা রোপণ করতে না পারলে মাটি জমে যাবে। এদিকে শৈতপ্রবাহের কারণে শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে।
দিনাজপুর, জামালপুর, মুক্তাগাছা, ভূঞাপুর উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রচন্ড শীতের কারণে এবার অনেকেই আমাদের সাথে কাজ করতে আসে নাই। দিনাজপুর থেকে আসা নুরুল ইসলাম জানান, গত বছর আমাদের দলে ১৫ জন লোক ছিলো এবার ঠান্ডার কারণে ১০জন এসেছে।
ভুয়াপুর চর আলোয়া গ্রাম থেকে আসা হামিদুর মিয়া জানান, আমাদের এলাকায় বেশ কিছুদিন আগে বোরো ধানের চারা লাগানো শেষ। তাই আমরা ৭জন মিলে ৫দিন যাবত মধুপুরে এসে ধানের চারা লাগানোর কাজ করছি। শীতের কারণে এবার অনেকেই আসে নাই।
কাজের মজুরী বেশী নেওয়ার বিষয়ে মুক্তাগাছা উপজেলার গাবতলি এলাকার শ্রমিক আছর আলী জানান, এবছর ঠান্ডার লাইগা কামলা (শ্রমিক)কম আইছে। দুইডা টেহা বেশি পাবার লাইগাইতো হাড় কাপাইনা শীতর মধ্যে কাম করবার আইছি।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ আল মামুন রাসেল জানান, চলতি মৌসুমে মধুপুর উপজেলায় প্রায় এক হাজার চারশত হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরদিকে, বোরো আবাদের জন্য কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বোরো মৌসুমে শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়ে থাকে। তবে, কৃষিতে আধুনিকতায়নের মাধ্যমে সংকট কমিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি জানান।