আশিকুর রহমান :-
যার বলিষ্ঠ ও সুদৃঢ় নেতৃত্বে আজ তিল তিল করে দেশটা গড়ে তুলেছেন শেখ হাসিনা বলে বলেছেন নরসিংদী-১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরো (বীর প্রতীক) এমপি।
শুক্রবার (২ আগষ্ট) বিকেলে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ছাত্র আন্দোলনের নামে সারাদেশে নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন এর আহ্বানে এক জরুরি মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সাধারণ ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলন আর এখন সাধারণ ছাত্রদের হাতে নেই। তাদের আন্দোলন হাইজ্যাক করে নিয়ে গেছে জামাত-বিএনপি। তাদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে জামাত-শিবির- বিএনপির নেতারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। দেশব্যাপী তারা অরাজকতা, নৈরাজ্য, নাশকতা ও সরকার উৎখাত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।কোমলমতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ভর করে দেশ ও জাতির শত্রু, স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশের উন্নয়নকে নস্যাৎ করতে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় দেওয়া হয়েছে আগুন। একইসঙ্গে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেছে। ঢাকার নিকটবর্তী জেলা নরসিংদীতে যে বর্বরতা ও নাশকতা হয়েছে তা ইতিহাস স্বাক্ষী হয়ে থাকবে। একটা স্বাধীন দেশে কখনোও জেলখানায় হামলা হতে পারেনা। হামলাকারীরা সকল আসামীদের ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, তাদের হামলায় জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, মাধবদী পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা ভবন ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে। এছাড়াও তারা ইটাখোলা পুলিশ ফাঁড়ি, পাঁচদোনা পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে মাধবদী থানা। জনগনের জানমাল রক্ষায় নিয়োজিত এক পুলিশ কর্মকতাকে হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ কেমন ববরর্তা? এ ধরনের নাশকতা সাধারণ ছাত্রদের ধারা সম্ভব নয়। এটা একমাত্র স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-বিএনপির ধারা সম্ভব। কারণ একটাই তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে দেশকে ভিক্ষুকের দেশে পরিণত করতে চায়।এখন কোটাবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে ভর করেছ স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা। আসছে একের পর এক রাজনৈতিক নির্দেশনা। সাধারণ ছাত্রদের উপর ভর করে নিজেদের আখের গোছাতে চাইছে বিএনপি-জামায়াতরা। অনলাইনে শুরু করেছে নানান ধরণের গুজব। এসব নৈরাজ্য ও নাশকতা সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের পায়তারা করছে তারা। এসব নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, অরাজকতা ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পাশাপাশি রাজপথে থেকে জামাত-বিএনপিকে মোকাবেলা করতে হবে। ৭১ এর চেতনায় সকল পরাজিত শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদ ইয়াসমিন, আরেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মাসুদা সিদ্দিকী রোজী, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান খোকা, প্রচার সম্পাদক রঞ্জন কুমার সাহা, পরিমল চন্দ্র ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক, ফজলুল হক, আব্দুল বাছেদ ভূঁইয়া, আসাদুজ্জামান, উপদপ্তর সম্পাদক মোঃ সেলিম আহমেদ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আদনান সরকার, আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব আশরাফ হোসেন সরকার, সাবেক ভিপি মিয়া মোঃ মঞ্জুর, সাবেক জিএস এসএম কাইয়ুম, ভাইস চেয়ারম্যান ওয়ালিউর রহমান আজিম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আঞ্জুমান আরা রিচি, শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মোঃ রিপন সরকার, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. রিপন, জেলা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক কায়কোবাদ হোসেন কানু, শহর যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ভূইয়া সোহেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তানজিরুল হক রণি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন, সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল আহমেদ শাওন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসমিন সুলতানা ও যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক এড. লুবনা নাসরিন লতা প্রমুখ। এছাড়াও ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে শোকাবহ আগষ্ট ও ছাত্র আন্দোলনে সকল নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি মতবিনিময় সভার সঞ্চালনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীর নাম থাকলেও তিনি ছিলেন অনুপস্থিত। তার অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একজন অরাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ব্যক্তি। আওয়ামী লীগের মত বড় একটা সংগঠন তার মত লোক দিয়ে নেতৃত্ব হবে না। তারপর তিনি বিতর্কিত ব্যক্তি। হাইব্রিড আওয়ামী লীগ। দল ও দেশের এমন ক্রাইসিস মূহুর্তে তার অনুপস্থিত বিরোধী দলকে শক্তি করা। তারা আরও বলেন, যে নেতা দলের এসময়ে জরুরি মতবিনিময় সভায় উপস্থিত না হওয়া মানে তার নেতৃত্ব দেউলিয়াত্বের প্রমাণ করে। এবিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।