সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শীতের রসে মিষ্টিমুখ এ এক অসাধারণ অনুভতি, রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
শীতের আমেজ আসতেই সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়েছে খেজুরের রস সংগ্রহের ধুম। কার্তিক মাস পেরিয়ে অগ্রহায়ণ মাসে শীতের প্রথম অনুভূতিতে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস আহরণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নতুন ধানের সঙ্গে শীতের পিঠা-পুলির উৎসব জমে উঠেছে ঘরে ঘরে। খেজুর রসের গুড়কে কেন্দ্র করে চলছে হুল্লোড়।
উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছের মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করে গাছ প্রস্তুতের কাজে ব্যস্ত। আগে গ্রামে গ্রামে খেজুর গাছের ছড়াছড়ি থাকলেও এখন কালের বিবর্তনে সেই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
জানা যায়, খেজুরের রস আহরণের মধ্য দিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। সে হিসেবে তাড়াশে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের পূর্ব প্রস্তুতি শীত আসার জানান দিচ্ছে। প্রস্তুতি হিসাবে খেজুর গাছের আগায় বিশেষ পদ্ধতিতে চলছে কাটাকুটির কাজ।
পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউরাইল গ্রামের গাছি মোঃ করিম প্রামানিক বলেন, একসময় তার এলাকায় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল, কিন্তু এখন সেই সংখ্যা অর্ধেকের বেশি নেমে এসেছে। কার্তিকের শেষে গাছ পরিষ্কার করে রস সংগ্রহের উপযোগী করা হয়। অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত চলে রস আহরণ। এই রস থেকে পাতলা লালি, পাটালি এবং দানাদার গুড় তৈরি করে বাজারজাত করা হয়।
গ্রামের মানুষের শীতের সকাল শুরু হয় খেজুর রস ও মুড়ি দিয়ে। পিঠা বানানোর অন্যতম উপকরণ এই গুড়, যা জামাই আপ্যায়নসহ নানা রকম আয়োজনকে ঘিরে আনন্দ বাড়িয়ে দেয়। তবে চাহিদার তুলনায় গাছের সংখ্যা কম হওয়ায় গুড়ের উৎপাদন আশানুরূপ নয়।
খেজুর গাছ সংরক্ষণ ও এর চাষাবাদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিলে এ ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি খাদ্য আরও অনেক দিন টিকে থাকবে
খেজুরের রস শুধু পানীয় বা মিষ্টি তৈরির উপকরণ নয়, এটি বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। তাই খেজুর গাছ রোপণ ও গুড় রক্ষার এখনই উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।