ইসমাইল ইমন, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের চলমান ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্পের কাজের গুণগত মান ঠিক না থাকলে বিল না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়া, প্রকল্পের কাজে কেউ অবৈধ লেন-দেন করলে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দেন মেয়র।
প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ২০ নভেম্বর বুধবার দুপুরে নগর ভবনের কনফারেন্স রুমে প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের সাথে বৈঠক এ মন্তব্য করেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাতা হোসেন।
বৈঠকে মেয়র বলেন, এই শহর আমার আপনার সবার। এখানকার রাস্তা দিয়ে আমার পরে আমার ছেলে-মেয়েরা হাঁটবে,আত্মীয়স্বজন হাঁটবে, নেক্সট জেনারেশন এ পথ দিয়ে হাঁটবে। তাই কাজের কোয়ালিটি শতভাগ ঠিক রাখতে হবে। এমন ভাবে রাস্তাটা করতে হবে যাতে বছরের পর বছর একটা উদাহরণ হিসেবে সবাই বলতে পারে যে এই রাস্তাটা অমুক প্রতিষ্ঠান করেছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ইমিডিয়েটলি সমস্ত প্রকল্পগুলো ভিজিট করে রাস্তার মালামাল ও কোয়ালিটি টেস্ট করে জানাবেন। আমি বলছি আপনারা যারা যারা ভালো কাজ করেছেন তাদের বিল দিয়ে দেয়া হবে। আর যারা খারাপ কাজ করবে তাদের পানিশমেন্টের আওতায় আনা হবে। এখানে আমি কোন ছাড় দিতে রাজি না। জনগণের টাকানিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলেছে তাদেরকে কিন্তু আমরা পানিশমেন্টের আওতায় আনব। এটাতে আমি কোন ছাড় দিব না। কাজেই আপনারা কোয়ালিটির দিক দিয়ে সুন্দরভাবে কাজ করেন। আজ থেকে কাজ শুরু করেন, কাজ বন্ধ রাখবেন না।
বৈঠকে নগরীর প্রয়োজনীয় স্থানগুলোতে ফুটওভার ব্রীজ হচ্ছেনা অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আপনারা ফুটওভার ব্রিজের কথা বলছেন। ফুটওভার ব্রিজের বাস্তবতা নিরীক্ষা করে ১৭টা ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে দেওয়া হবে এবং সব কাজ দ্রুত শেষ আমি কিছু দৃশ্যমান রেজাল্ট জনগণকে দেখাতে চাই।
বৈঠকে ঠিকাদাররা কাজ করার ক্ষেত্রে পূর্বের কাউন্সিলররা ঘুষ নিতেন এবং ঘুষ না দিলে মেয়র-কাউন্সিলর মিলে কাজে বাধা সৃষ্টি করতেন অভিযোগ করলে মেয়র বলেন, আপনারা কেউ কোন টাকা ঘুষ হিসেবে কাউকে দিবেন না। কোন কোন কাউন্সিলর আগে আপনাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বললেন আপনারা ৮, ১০, ১৫ লাখ টাকা করে। এটার তালিকা দিন। যদি কোন কর্মকর্তা আপনাদের কাছে টাকার ডিমান্ড করে সরাসরি আমার কাছে জানাবেন তাকেও পানিশমেন্টের আওতায় আনবো। এখানে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা। আপনারা সরাসরি কাজ করবেন, ভালো কাজ করবেন এবং এই ভালো কাজের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরকে আপনারা সুন্দর করে তুলবেন এবং একটা পরিচ্ছন্ন নগরীতে পরিণত করবেন। রাস্তা যখন আপনারা করতে যাবেন সুযোগ থাকলে, প্রয়োজন থাকলে রাস্তার পাশে ডাস্টবিন করে দিবেন, গাছ লাগাবেন। নগরীর উন্নয়নে ইনোভেটিভ কিছু করার চেষ্টা করেন।
বৈঠকে ঠিকাদাররা দ্রুত বকেয়া বিল প্রদানের দাবি জানান। এছাড়া, রাজনৈতিক বিবেচনায় পূর্বে যেসব ঠিকাদার কাজ করতে পারেননি বা কাজ করলেও বিল ঠিকমতো পাননি তাদের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তারা। বর্তমান শুস্ক মৌসুমেই সড়ক সংস্কার ও নির্মাণের উপযুক্ত সময় বিধায় চসিকের পক্ষ থেকে ঠিকাদারদের সহযোগিতার দাবি জানান তারা। অন্যান্য সেবা সংস্থার কারণে সড়ক নির্মাণ বা নবনির্মিত সড়ক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে সমন্বয় প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন ঠিকাদাররা।