আশিকুর রহমান :-
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকির খোঁজ মিলছে না। ছাগলকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন বলে একাধিক ইলেকট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়া প্রকাশ করেন। তাঁর এত দূর্নীতির খবর জনসম্মুখে এলে পুরো জেলা জুড়ে চলে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। পরে তিনি চলে যান আত্মগোপনে। বিভিন্ন মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা তাঁর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে গণমাধ্যম কর্মীরা উপজেলা পরিষদ, বাসভবন সহ সম্ভব্য স্থান গুলোর কোথাও খোঁজে পায়নি তাঁকে। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা পরিষদ সহ এলাকা ছাড়া রয়েছেন তিনি। এনিয়ে মানুষের মাঝে চলে গুঞ্জন। এসব গুঞ্জন ঢাকতে এবং তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ হওয়া দূর্নীতি খবর আড়াল করতে তিনি কৌশল অবলম্বন করেন। সম্প্রতি তিনি তাঁর অনুসারী ও রায়পুরার কিছু ইউপি চেয়ারম্যান দিয়ে তাঁর গুণকীর্তন লিখে ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে যাচ্ছেন। রায়পুরা চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি অলিপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুুদ এবং সদস্যসচিব শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খান রাসেল, আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক মোল্লা, মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহি সহ বেশ কিছু চেয়ারম্যান লাকিকে নিয়ে ছবি তোলেন এবং তা ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে মঞ্জুর এলাহি তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে ছবি পোস্ট করে লেখেন ২৬ জুন আমরা চেয়ারম্যানবৃন্দ লাকি আপার সাথে। কিন্তু তিনি স্থানের কথা উল্লেখ করেনি।
পরে এবিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহি মুঠোফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য বলেন, একজন দূর্নীতিবাজ ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেখলাম সমাজের কিছু মানুষ তাঁর পক্ষ সাফাই গেয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে করে সমাজ থেকে দূর্নীতি রোধ করা তো দূরের কথা দূর্নীতিবাজরা এতে করে আরও উৎসাহ পাবে এবং দূর্নীতি বৃদ্ধি পাবে।
লায়লা কানিজ লাকি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সরকারি তিতুমীর কলেজের বাংলা বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে ২০২২ সালে রাজনীতিতে এসেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হন তিনি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকও। তিনি রাজস্ব কর্মকতা মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী। মতিউর এর দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ইফাতের ছাগলকাণ্ডের খোঁজ নিতে গিয়ে মিলেছে লায়লা কানিজ লাকির অঢেল সম্পত্তির খোঁজ। শিক্ষিকা থেকে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের এত সম্পত্তি জেনেই চোখ কপালে সাধারণ জনতার। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।